জুলফিকার আলী কানন,মেহেরপুর নিউজ ২৪ ডট কম,২৯ জানুয়ারী:
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সীমন্তবর্তি কাজীপুর গ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার ডজনখানেক মামলার আসামী মিল্টন হোসেন (৫৫) ভারতের মাটিতে খুন হয়েছেন।
সন্ত্রাসী মিল্টন কাজীপুর গ্রামের বাগু হোসেনের ছেলে।মিল্টনের স্ত্রী বেনজুরা খাতুন তার স্বামী নিহত হবার খবর নিশ্চিত করেছেন।
এ ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২ টার দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৪৬/৪এস এর নিকট দু দেশের বিওপি কমান্ডার পর্যায়ের এ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৩২ বর্ডারগার্ড (বিজিবি) প্রাগপুর কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার আজিজ ও ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৮৫ বিএসএফ এর ফুলবাড়ি ক্যাম্পের ইন্সেপেক্টর ওলিল কুমার।আগামীকাল বুধবার যে কোন সময় ভারতের বুকে নিহত বাংলাদেশী সন্ত্রাসী মিল্টনের লাশ ফেরৎ পাঠানোর প্রতিশ্রতি দিয়ে বর্ডারগার্ড বিজিবি ও বিএসএফ এর পতাকা বৈঠক সমাপ্ত হয়েছে।
বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কাজীপুর বিওপি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার আজিজ জানান,সন্ত্রাসী মিল্টনকে ভারতের নদীয় জেলার শিকারপুর এলাকার ফনকিতলা সব্জীপাড়া এলাকায় আজ মঙ্গলবার ভোর রাতের দিকে বোমা হামলা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ভারতের শিকারপুর এলাকার কৃষকরা বাংলাদেশী সীমান্তে তাদের জমিতে কাজ করতে এসে প্রথমে কাজীপুর এলাকার কৃষকদের খবর দিলে নিহত মিল্টনের পরিবারের লোকজন বিজিবি কাজীপুর ক্যাম্পে খোঁজ নেন। এসময় কাজীপুর বিওপি ক্যাম্প ভারতের নদীয় জেলার শিকারপুর বিএসএফ ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ করে মিল্টনের নিহতের খবর নিশ্চিত করেন।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান,সন্ত্রাসী মিল্টনের নামে গাংনী, দৌলতপুর থানায় একাধিক হত্যা সহ মাদক আইনে,চুরি ডাকাতী,ছিনতাইসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে সে গাংনী থানা পুলিশের হাতে আটক হলেও হ্যান্ডকাপ পরা অবস্থায় পুলিশকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এর পর থেকে পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে ভারতে পালিয়ে থকতো।
ওসি মিজানুর রহমান জানান,ভারতের প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করে ফেলে রেখেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নিহত মিল্টন কাজীপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে কাবের উদ্দনিকে ২০১০ সালের ১৯ মে কাজীপুর ব্রীজের উপর বোমা হামলা ও জবাই করে হত্যা করে। কাবের হত্যা মামলার প্রধান আসামী মিল্টন ২০১১ সালে পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল খাটে। এছাড়া কাজীপুর গ্রামের সহদোর ভাই রফিকুল ইসলাম আবুজেল ওরফে আবজাল হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামী ছিলেন মিল্টন। মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে মিল্টন ও তার সহযোগীরা তাকে হত্যা করে। পরে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বাড়ি ফেরে। এসময় সে সীমান্ত এলাকায় নিজ নামে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে এলাকায় চাঁদাবাজী,বোমাবাজি,অপহরণ,ভারত থেকে গাঁজা,ফেনসিডিল,আগ্নেয়াস্ত্র,বোমা তৈরীর গান পাওডার নিয়ে এসে দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান দিতে। গত ১০ ডিসেম্বর ভোর রাতে কাজীপুর সীমান্তের ১০ টি বোমা ফাটিয়ে এলাকাবাসিকে আতংক করে ভারত থেকে গরু পাচার করেছিল। এর একদিন আগে কাজীপুর ৮ কবরের পার্শ্বেও একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গরু এনেছিল বলে জানান বিওপি কমান্ডার