ইয়াদুল মোমিন,০২ এপ্রিল:
২য় ধাপে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে প্রত্যেকটি ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থীদের ভরাডুবির ঘটনা ঘটেছে। তবে এর জন্য সঠিক প্রার্থীকে মনোনয়ন না দেয়া এবং জামায়াত প্রার্থীরা আলাদাভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করায় এ ভরাডুবির ঘটনা ঘটেছে ধারনা করছেন দলের নেতাকর্মীরা। দলটির শীর্ষ নেতার দাবি কোনো ইউনিয়নে বিএনপির ভোটারদের ভয়ভীতির দেখানোর কারণে তারা ভোট দিতে না আসায় হেরেছে তারা।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দারিয়াপুর ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তৌফিকুল বারী বকুল ( অটোরিক্সা) ৩৭৬৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। বিএনপি প্রার্থী আনছারুল ইসলাম কাটু ভোট পেয়েছেন (ধানের শীষ) ৩৬০১ ভোট, জামায়াত প্রার্থী আওলাদ হোসেন (চশমা ) পেয়েছেন ২৬৫৬ ভোট, বিএনপির বিদ্রোহী আসাদুল হক (মোটরসাইকেল) পেয়েছেন ২০১ ভোট, আ.লীগ প্রার্থী অ্যাড. কলিম উদ্দিন (নৌকা ) পেয়েছেন ১১৯৪ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাশেম আলী আনারস পেয়েছেন ৯৪৫ ভোট, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) (বাইসাইকেল) পেয়েছেন ৬৮ ভোট।
মোনাখালী ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী মফিজুর রহমান মফিজ (ঘোড়া) ৪০৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচত হন। বিএনপি প্রার্থী আজিম উদ্দিন গাজী (ধানের শীষ) পেয়েছেন ১৭৪৯ ভোট, জামায়াত প্রার্থী খান জাহান আলী (চশমা) পেয়েছেন ২৮৬৯ ভোট, আ.লীগ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম গাইন অপা (নৌকা ) পেয়েছেন ৩৩৬৯ ভোট এবং আ.লীগের অপর বিদ্রোহী শফিকুল ইসলাম মোল্লা (আনারস) পেয়েছেন ১১০০ ভোট।
মহাজনপুর ইউনিয়নে আ.লীগ প্রার্থী আমাম হোসেন মিলু (নৌকা) ৬৫৬৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপি প্রার্থী আহসান হাবিব সোনা (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৫৮৮২ ভোট , আ.লীগের বিদ্রোহী শেখ মিসকিন পেয়েছেন (আনারস) ৯৭ ভোট এবং বিএনপির বিদ্রোহী তোফাজ্জেল হোসেন (মোটরসাইকেল) পেয়েছেন ৬৬ ভোট।
বাগোয়ান ইউনিয়নে আ.লীগ প্রাথী আয়ুব হোসেন ১১৩৬৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। বিএনপি প্রার্থী মাঞ্জারুল ইসলাম (ধানের শীষ) ৮৬৩৫ ভোট এবং জামায়াত প্রার্থী সেলিম খান (চশমা) পেয়েছেন ৪৭১৪ ভোট।
নির্বাচনী ফলাফল থেকে জানা গেছে, দারিয়াপুরে বিএনপির বিদ্রোহীর ২০১ ভোট কাল হয়েছে বিএনপির। পাশাপাশি বাকি ইউনিয়ন গুলোতে জামায়াতের প্রার্থীরা তাদের পথের কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছিল।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে মুজিবনগর উপজেলা বিএনপি’র দু’নেতা বলেন, দলীয় প্রতিকে নির্বাচন করার বিষয়ে অবশ্যই জামায়াতকে দু’একটি ইউনিয়নে ছাড় দিয়ে তাদের সাথে নিয়ে নির্বাচন করলে এ অবস্থা হত না। জামায়াতকে ছাড় না দেয়ায় তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংকে বিএনপি হাত দিতে পারেনি। তবে দু’একটি ইউনিয়নে প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় কিছু ভোট বিএনপির বাইরেও গিয়েছে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি মাসুদ অরুণ বলেন, দারিয়াপুর এবং মহাজনপুর ইউনিয়নে খুব কম ভোটে তাদের প্রার্থীরা হেরেছে। মহাজনপুরে আ.লীগ প্রার্থী আমাম হোসেন মিলু ভোটের দু’দিন আগে থেকে পুলিশ দিয়ে তাদের নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি হয়রানি করার কারণে কিছু ভোটার ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেনি। সেকারণেই সেখানে ব্এিনপি প্রার্থীরা হেরেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি আরো বলেন, অন্যান্য ইউনিয়নে জামায়াতের সাথে তাদের বোঝাপড়াটা আগে থেকেও হয়েছিল না বলেও এমন হতে পারে বলে তিনি স্বীকার করেন। মাসুদ অরুণ বলেন, এই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে জেলার বাকি উপজেলার ইউনিয়ন নির্বাচনগুলোতে বুঝে শুনে তার দল নির্বাূচন করবে বলে তিনি জানান।